টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন সাদমান ইসলাম। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তও তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। ৩৬১ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ।
১১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন সাদমান। অন্য প্রান্তে ১১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন নাজমুল। ৪৩ রান করে আউট হন সাইফ হাসান।
হারারে টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর আগেই দাপট দেখাচ্ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে রানবন্যা বইয়ে টেস্টে বাংলাদেশ তাদের অবস্থানটা আরো পোক্ত করল। আজ চতুর্থ দিনের মধ্যাহ্নবিরতির পর ১ উইকেটে ২৮৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। এতে জিম্বাবুয়েকে ৪৭৭ রানের লক্ষ্য দেয় মুমিনুল হকের দল।
তিন অঙ্কের জাদুকরি স্বাদ সাদমান পেয়েছেন প্রথমবার, শান্ত দ্বিতীয়বার।
দুজনের সেঞ্চুরির ধরন যদিও দুই রকম। তবে কার্যকর দুটি ইনিংসই। ৯ চারে ১৯৬ বলে ১১৫ করে অপরাজিত থেকে যান সাদমান। সময়ের দাবি মেটানো ব্যাটিংয়ে ৫ চার ও ৬ ছক্কায় শান্ত অপরাজিত ১১৮ বলে ১১৭ রান করে।
দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি রান ১৯৬, দ্বিতীয় উইকেটে যা দেশের বাইরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের একমাত্র আউট হওয়া ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান। ৪৩ রান করে তিনি আউট হন সকালের সেশনে।
সাদমান ব্যাটিং শুরু করেছিলেন তৃতীয় দিন বিকালে। দিন শেষ করেন ২২ রান করে। চতুর্থ দিন সকাল থেকে এগিয়ে যান একই নির্ভরতায়। সাইফের সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটি থামে ৮৮ রানে।
তিনে নামা শান্ত যখন উইকেটে যান, সাদমান তখন ফিফটির কাছে। এরপর দুজনের জুটিতে দ্রুত বাড়তে থাকে বাংলাদেশের রান।
১০১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন সাদমান। ওয়ানডের গতিতে এগিয়ে শান্তর ফিফটি ৬০ বলে।
সেঞ্চুরি পথে এগিয়ে যেতে নতুন জীবন পান দুজনই। ৫৫ রানে পয়েন্টে সাদমানের সহজ ক্যাচ ছাড়েন ডিওন মায়ার্স, ৭০ রানে স্লিপে শান্তকে জীবন দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর।
জিম্বাবুয়ের কোনো বোলারই সেভাবে ভাবনায় ফেলতে পারেননি দুজনকে। দলে কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার নেই। দুই অনিয়মিত স্পিনার রয় কাইয়া ও মিল্টন শুম্বা ছিলেন একদমই নির্বিষ।
বিশেষ করে কাইয়ার অফ স্পিন পেয়ে বসেন শান্ত। তার ছয় ছক্কায় পাঁচটিই কাইয়ার বলে।
দুজনই সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ডাবলস নিয়ে। সাদমানের লাগে ১৮০ বল, শান্তর মোটে ১০৯ বল।
গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ফিফটির পর সাদমান চোটের কারণে খেলতে পারেননি ঢাকা টেস্টে। পরে চোট কাটিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে গেলেও নিজের জায়গা ফিরে পাননি। তামিম ইকবালের সঙ্গে সেখানে দুই টেস্টেই ওপেন করেন সাইফ হাসান। এই টেস্টে আবার সুযোগ আসে তামিম চোটে পড়ায়। সেঞ্চুরিতে সাদমান নিশ্চিত করে দিলেন, আপাতত তাকে বাইরে রাখা যাবে না।
সাদমানের বাইরে থাকার ওই শ্রীলঙ্কা সফরেই প্রথম টেস্টে ১৬৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন শান্ত। টানা ব্যর্থতার পর ওই সেঞ্চুরি এসেছিল তার স্বস্তি হয়ে। কিন্তু এরপরই ব্যর্থতার ধারা। চার ইনিংসে রান ০, ০, ২৬, ২। এই সেঞ্চুরিতে তিনি আবার পোক্ত করতে পারলেন নড়বড়ে হয়ে যাওয়া জায়গাটা।
দুজনের সেঞ্চুরির খানিক পরই ইনিংস ঘোষণা করে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক।
ক্রিকেটীয় অনিশ্চয়তা মাথায় রেখেও ৪৭৭ রানের লক্ষ্য জিম্বাবুয়ের জন্য বলা যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। চতুথূ ইনিংসে কখনোই ৩৩১ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। জিততে পারেনি ১৬২ রানের বেশি তাড়া করে।

Prev Post
Comments