করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও দেশের ভিতরে তার নাগরিকদের নানা উপায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। কিন্তু দেশের বাইরে কাজ করা প্রায় ৬ লাখ বাংলাদেশি নাগরিকও এর বাইরে নন। তাদের জন্যও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
এ ছাড়া করোনা পরবর্তী বিশ্বে কূটনীতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে চলছে নানা কার্যক্রম। বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশিদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে সার্বিক সহযোগিতা করছে সরকার। করোনা আক্রান্ত দেশগুলোতে পাঠাচ্ছে সাহায্য, মেডিকেল টিম।
এ পর্যন্ত ভুটান, মালয়েশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, রাশিয়া, জার্মানি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপ, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরের ৪ হাজার ৪২২ জন বিদেশী নাগরিক ঢাকা ছেড়ে গেছেন। স্থানীয় মিশনগুলো এ জন্য ভাড়া করেছে চার্টার্ড বিমান। এ যাত্রীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তারা নিজের টাকায় ফিরে গেছেন।
বিদেশিদের মধ্যে যারা ফিরে গেছেন তাদের বেশিরভাগ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং অন্যান্য পেশায় কাজ করছেন। তাদের প্রকল্পগুলি বর্তমানে স্থগিত রয়েছে।
অন্যদিকে, চীন, ভারত, নেপাল, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ওমান ও তুরস্কে তীর্থযাত্রী, শিক্ষার্থী, পর্যটক, রোগী এবং ব্যবসায়ীসহ ১ হাজার ৭৯৯ জন আটকে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক এর মধ্যে দেশে ফিরেছেন।
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহকে বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের সার্বিক অবস্থা তদারকি করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ মিশনগুলি ‘হটলাইন নম্বর’ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং অনেক মিশন প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনলাইন চিকিৎসার পরামর্শ দেয়ার জন্য ‘ডাক্তারদের পুল’ গঠন করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের জন্য অর্থ সরবরাহ করেছে। বাংলাদেশ মিশনগুলি বরাদ্দকৃত অর্থের সাহায্যে বিভিন্ন দেশে বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করছে।
এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ভুটান, মালদ্বীপ, চীন, কুয়েতসহ কয়েকটি দেশকে বাংলাদেশ উপহার পাঠিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, করোনা পরবর্তী কূটনীতিক সম্পর্ক জোরদার করতে এর মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। অনেকের সঙ্গে টেলিফোনে সরাসরি কথা বলছেন। কয়েকটি দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী যৌথ স্বাক্ষরে চিঠি পাঠিয়েছেন। এসব চিঠির মূল উদ্দেশ্য, এ দেশগুলোতে ভবিষ্যতেও যাতে জনশক্তি রফতানি অব্যাহত রাখা যায়।