দেশে একদিনে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ভেঙে আবারো নতুন রেকর্ড হলো। বৃহস্পতিবার ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ২৭ জুন সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ছিল ১১৯ জনের। সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছাড়াও টানা পাঁচ দিন শতাধিক মৃত্যুর রেকর্ডও হলো। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ হাজার ৬৪৬ জন।
এদিন শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৩০১ জন। এতে মোট শনাক্তরে সংখ্যা দাঁড়াল ৯ লাখ ২১ হাজার ৫৫৯ জন। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৯০। এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে একবার মৃত্যু ও দুইবার শনাক্তের রেকর্ড ভাঙা দেখলো দেশ। কঠোর লকডাউনে যাওয়া কত জরুরি ছিল, তা শনাক্ত ও মৃত্যু এই পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে।
করোনার প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় অনেক ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় ঢেউ। আগেরবার সর্বোচ্চ ৫০ মৃত্যু এবং দুই তিন হাজার শনাক্তের খবরে মানুষের মধ্যে যে ভয় দেখা দেয়, এবারের পরিস্থিতি তার চেয়ে সংকটপূর্ণ হয়ে উঠলেও ভয় যেন অনেকটাই ফিকে হয়ে আসছে।
এ সম্পর্কে মনোবিদ ডা. মেখলা সরকার বলেন, যেকোনো চাপ মানুষের মধ্যে প্রথমে যে ভয়, উদ্বেগ তৈরি করে, পরে সেই মাত্রা কমতে থাকে। মানুষের মস্তিস্কের গঠন যেকোনো পরিস্থিতিকে ধীরে ধীরে সহনীয় করে তোলে। যত ভয়াবহ শোক বা কঠিন পরিস্থিতি আসুক না কেন, মানুষ যখন ক্রমাগত এর মধ্য দিয়ে চলতে থাকে, এক পর্যায়ে তা সহনীয় হয়ে যায়। মস্তিস্কের এই এডাপ্টেশন ক্ষমতা রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে।
মেখলা সরকার বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মানিয়ে নেয়ার এই ক্ষমতা বৈজ্ঞানিকভাবে সদর্থক। নইলে মৃত্যু শোক, সম্পদহানী বা আঘাতের মতো বিষয়গুলি মানুষ মোকাবিলা করতে পারতো না। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে মস্তিস্কের এ মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা আমাদের জন্য বিপদ বয়ে আনতে পারে।
এই মনোবিদের বক্তব্য, করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর উল্লম্ফনের মধ্যে বসবাস অনেক মানুষের মধ্যে মানিয়ে নেয়ার যে ক্ষমতা তৈরি হয়, তাতে করোনার হাত থেকে রক্ষার পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও অবহেলা তৈরি করে। এটাই বয়ে আনতে পারে বিপজ্জনক পরিস্থিতি।
ডা. মেখলা সরকার আরো বলেন, তবে বিষয়টি ব্যক্তিভেদে আলাদাও হতে পারে। শনাক্ত ও মৃত্যুর উল্লম্ফন অনেককে অধিক সচেতেও করতে পারে। প্রথম ধাপে যারা ভয় করেনি, এরকম অনেকে এখন ভয় পেতে পারে। এর উল্টোটাও হতে পারে আবার।

Prev Post
Comments