তিলোত্তমা ঢাকায় অন্যরকম রাত নামছে প্রতিদিন। মধ্যরাতেও খাবারের সন্ধানে বিভিন্ন মোড়ে বহু মানুষ ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ত্রাণের আশায় ছোটাছুটির পরও ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। করোনা পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে জীবনের সব হিসাবে-নিকাশ।
রাতের ঢাকায় অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটির নাম ধরে নিচ্ছি গফুর মিয়া। পেশায় কাঠমিস্ত্রির সহকারী, গফুরের জীবন ঝুলে গেছে করোনার থাবায়। রোজগারের পথ বন্ধ, সঞ্চয়ে যা ছিল তাও শেষ। জীবনেও অন্যের কাছে হাত না পাতা গফুর, শেষমেষ কেউ যাতে চিনতে না পারে তাই মুখ ঢেকে হাত পেতেছেন রাস্তায়।
তিনি বলেন, এ রকম বিপদে আর পড়িনি। রাতের বেলায় যদি কেউ কিছু দেয় তাহলে খাই না হলে খাই না।
শুধু গফুর তো নন, ত্রাণের আশায় এমন অনেক মানুষ পথে নেমেছেন, যাদের পথে নামার কথা নয়।
এ কেমন সময়, যেখানে মানুষই এখন মানুষের ভয়! আবার জান বাজি রেখে সাবধানতা মেনে কোথাও আবার এ মানুষই দাঁড়াচ্ছে মানুষের পাশে।
একজন রিকশাওয়ালা বলেন, ৫০ জনের জন্য কিছু করা হলে সেখানে ২ হাজার লোক।
অভুক্ত মানুষ গাড়ি দেখলেই ছুটে আসছেন খাবারের আশায়।
সব কিছুর উপরে জীবন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পেটের চাহিদা? সেটাওতো জীবনেরই জন্য। সেই তাড়নায় মধ্যরাতেও রিকশা নিয়ে অনেকেই নেমেছেন রাস্তায়।
আরেক রিকশাওয়ালা ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেখিয়ে বলেন, এটি আমার মায়ের। ওষুধ কিনতে হবে, পেট চালাতে হবে।
জীবন নাকি জীবিকা? উত্তর না জানা কঠিন এ প্রশ্নের সামনে বহু মানুষকে দাঁড় করিয়েছে করোনা। তারা বলছেন, কবে কাটবে এমন আঁধার? এ যে রাতের চেয়েও অন্ধকার।